শনিবার, ১৮ মে ২০২৪, ৪ জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১
অনলাইন ডেস্ক।।
পঁচিশ বছর বয়সে চার বিয়ে করেছেন জুয়েল। অত্যাচারে তিন স্ত্রী চলে যাওয়ার পর সর্বশেষ বিয়ে করেছেন উপজেলার খাঁয়েরহাট গ্রামের নুরুল আমিনের মেয়ে সুবর্ণাকে (২০)’। বছর খানেক আগে বিয়ে হওয়া সুবর্ণাকে বরণ করতে হয়েছে জুয়েলের আগের তিন স্ত্রীর ভাগ্য। তাদের মতো তিনিও রেহায় পাননি নির্যাতন থেকে। জুয়েল উপজেলার একই গ্রামের মহসীনের ছেলে ।
বৃহস্পতিবার (১৭ ডিসেম্বর) সুবর্ণার ডান পায়ের হাটুর নিচে ও ওপরে সিগারেটের ছ্যাঁকায় ক্ষতবিক্ষত করেছেন। সংবাদ পেয়ে মা নাজমা ও ভাই দুলাল রাত ৮ টায় বাঘা হাসপাতালে ভর্তি করেছেন তাকে।
হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক শিরিন আকতার জানান, সুবর্ণার ডান পায়ের হাঁটুর নিচে ও ওপরের অংশে বেশ কয়েকটি ক্ষতচিহৃ পাওয়া গেছে।
শুক্রবার হাসপাতালের আন্তঃ বিভাগের মহিলা ওয়ার্ডে গিয়ে দেখা যায়, মেয়ের পাশে বিষণ্ন মনে বসে মা নাজমা বেগম। সেখানে কথা হলে সুবর্ণা জানান, জুয়েলের এক হাত দিয়ে তার দুই হাত ধরে রেখে পরনের পায়জামার ওপর দিয়ে সিগারেটের জ্বলন্ত আগুন চেপে ধরে। সেই আগুনে বিভিন্ন অংশ পুড়ে গেছে। শুধু এবারই নয়, বিয়ের পর থেকে কারণে অকারণে নির্যাতনের শিকার হতে হয়েছে তাকে। অন্ত:সত্বা অবস্থায় নির্যাতনের শিকার হয়ে সন্তানও নষ্ট হয়ে গেছে। পেটে লাথি মারার কারণে রক্তক্ষরণে তার গর্ভপাত হয়ে যায়। গরিব পরিবারের মেয়ে বলে নির্যাতন সহ্য করেও সংসার করছি।
মা নাজমা বলেন, বিয়ের কয়েক মাস পর ধারে ত্রিশ হাজার টাকা নিয়েছিল জুয়েল। সেই টাকা চাওয়ার পর থেকেই মাঝে মধ্যে মেয়েকে নির্যাতন করে। আমার চেয়ে জুয়েলের অবস্থা ভালো দেখে বিয়ে দিয়েছি। তবে এতটা খারাপ হবে বুঝতে পারিনি।
অভিযোগ অস্বীকার করে জুয়েল বলেন, শুধু আমারই নয়, তারও একাধিক বিয়ে হয়েছিল। বিয়ের পর থেকে সে আমার কথামতো চলাচল না করে নিজের ইচ্ছেমতো চলতে চায়। এনিয়ে সংসারে বাকবিতণ্ডা হয়। তবে অশান্তির মূলে হচ্ছে সুবর্ননার মা। ৩ দিন আগে গ্রামের লোকজন আমাকে ও তার পরিবার বুঝিয়েছে। কিন্তু সে কথায় তাদের মনোযোগ নাই।
সুবর্ণার গর্ভপাতের বিষয়ে তিনি বলেন, কেউ নিজের বাচ্চাকে ফেলে দিতে চায় না। হঠাৎ হয়ে যায়। সবাই মিলে আমাকে ফাঁসানোর জন্য মিথ্যা অভিযোগ করছে।
বাঘা থানার ডিউটি অফিসার উপ পরিদর্শক (এসআই) শাহ আলম জানান, এ ঘটনায় শুক্রবার সুবর্ণা বাদী হয়ে থানায় অভিযোগ করেছেন।